" আমরা যা ভাবি, যা বলি, আর যা করি " – PART ২
সকালে উঠে হাত মুখ ধুয়ে সোফা তে বসলাম চায়ের কাপ তা নিয়ে, বসে খবরের কাগজ টা না খুঁজে পেয়ে টিভির রিমোট টা নিয়ে টিভি তা চালু করতেই খবরের চ্যানেল টা চালু হলো আর প্রথম খবর তাই দেখলাম এরম " পশ্চিম বাংলায় আবার একটা স্ক্যাম - এবার সামনে এলো এক মন্ত্রীর ঘুষ নেওয়ার ভিডিও "। আমি তৎক্ষণাৎ টিভির চ্যানেল টা চেঞ্জ করলাম ইংলিশ খবরের চ্যানেল এ তো ওখানেও দেখি যে এক ই খবর বারবার দেখছে। স্ক্যাম টা সত্যি ই ঘটেছিলো এটা বুঝলাম, তো তখন তাড়াতাড়ি ইন্টারনেট এ সার্চ করলাম আর পড়লাম পুরো ব্যাপার টা, পরে নিজের মনে হলো যে আমরা মানুষেরা নিজেদের ছোটো খাটো কাজ করানোর জন্য অফিসের পিয়ন থেকে চালু করে অফিসের ওপর মহলের লোকেদের কে ঘুষ দিয়ে থাকি। যাই হোক অটো বেশি না ভেবে ব্যাগ টা নিয়ে কলেজের এর জন্য বেরোলাম।
কলেজে আজ আমাদের একটা মিটিং ছিলো যেখানে উনিভার্সিটির লোকজন আসবে কলেজের ইনফ্রাস্ট্রাকচার দেখতে শিক্ষা ব্যবস্থা দেখতে, তাই আমাদের আজ বলা হয়েছিলো আমাদের সব প্রজেক্ট এর কাজ দেখাতে, আরো অনেক কিছু ভাবে নিজেকে পুরোপুরি তৈরী করে আস্তে। তো আমি আর আমার ক্লাস এর সবাই রেডি ছিলাম যে আমরা সব প্রশ্নোর জন্য প্রস্তুত আছি।
দুপুর হলো আমরা সবাই কলেজের অডিটোরিয়াম এ গেলাম কালচারাল ফাঙ্কশন এটেন্ড করতে। গিয়ে দেখি সবাই আছে কিন্তু আমাদের কলেজের ট্রাস্টি আর ইউনিভার্সিটি থেকে আসা লোক গুলোই নেই, যাই হোক ফাঙ্কশন ভালোই হলো আর সেটা শেষ হওয়ার পর আমি আমার টীম কে নিয়ে ল্যাব এ চলে গেলাম কারণ এবার আমাদের প্রজেক্ট দেখানোর সেশন হওয়ার কথা আছে।
আমি আমার টীম কে নিয়ে ল্যাব এ ছিলাম , কিছুক্ষন পরেই আমাদের প্রিন্সিপাল আর আরো অনেকে এলো ল্যাব এ আমাদের প্রজেক্ট টা দেখাতে, এবার তাদের মধ্যে ইউনিভার্সিটি থেকে আসা একজন আমায় একটা প্রশ্ন করলো তো আমি সেটার উত্তর দিলাম তরপর আমাদের মধ্যে আরো অনেকেই করলো , তো সবাই ই বলতে পারছিলো তো তারই মধ্যে একজন পড়লো না উত্তর টা দিতে তো সেই ব্যক্তি টি আমাদের স্যার এর দিকে তাকিয়ে একটু অন্য রকম রিঅ্যাকশন দিলো।
পরের দিন আমার সেই বন্ধুটিকে ডাকা হলো প্রিন্সিপাল এর রুমে, ও যখন স্যার এর সাথে দেখা করে এলো তখন ও কেন জানিনা একটু অন্যরকম ভাবে ব্যবহার করছিলো, জিজ্ঞাস করতে ও কিছুই বলছিলো না।
কিছুদিন পরে শুনলাম ও কলেজে ছেড়ে দিয়েছে , ওকে ফোন করলাম তো সেটাও রিসিভ করলো না। কিছুদিন পর আমাকেও আমাদের প্রিন্সিপাল ডাকলো , আমি কিছুই জানতাম না তো আমি গেলাম স্যার এর রুম এ তো গিয়ে দেখি অন্য একটাও লোক বসে ছিল ওখানে। এরপর আমায় স্যার এমন কিছু বললো যেটা শুনে আমি চমকে গেলাম কিন্তু কিছুই বলতে পড়লাম না।
কিছু দিন পরে কলেজে গেলাম একটা প্যাকেট নিয়ে আর আমি এটা জানতাম যে আজ ই আমার শেষ দিন কলেজে। প্রিন্সিপাল স্যার এর রুমে গিয়ে দেখি আমার মামা ওখানে বসে আছে, আমি তো তাকে দেখে পুরো চমকে গেলাম কিন্তু কেন জানি না রুমে এমন একটা জিনিস দখলাম সেটা দেখা নিজেরই নিজের ওপর কেমন একটা লাগছিলো, স্যার এর টেবিলে দেখি একটা ফাইল রাখা আর তার মধ্যে দিয়ে একটা পাতা বেরিয়েছিল যার মধ্যে কিনা আমার নাম তা সেকেন্ড এ ছিল একটা লিস্ট এ আর আমার সেই বন্ধুটার নাম ছিল ফার্স্ট এ , তখন কেন জানি না নিজের ওপর ঘিন্না হচ্ছিলো নাকি রাগ হচ্ছিলো সেটা র বুঝতে পারলাম না আর রাগের মাথায় আমার হাতের প্যাকেট তা স্যার এর টেবিলে রেখে বেরিয়ে পড়লাম।
আমি জানি না যে আমি আমার মামা কে আর কনোদিন ও আগের মতো ভালো চোখে দেখতে পারবো নাকি না।
আমরা আমাদের জীবনে অনেক কথা বলে থাকি যে ঘুষ নেওয়া ভালো না, করাপশন নিয়ে ও অনেক কিছু বলে থাকি ভালো মন্দ কথা বলে থাকি কিন্তু, আমাদের সাথে ই এরম কেন ঘটনা যখন হয় বা আমরা ফেঁসে যাই তখন আমরা কেন কিছু না ভেবে ওখান থেকে বেরোনো টাই ভালো বুঝি আর সেখানে থেকে কি ভাবে বেরোতে হয় সেটাই আমার থেকে আপনারা বেশি ভালো জানেন।
- Prodipto Das
No comments:
Post a Comment